আবদুল খালিক শাহবাগি

এখলাস ও লিল্লাহিয়াত শব্দ দুটি সমার্থক। বাংলায় নিষ্ঠা। নেক আমল আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হওয়ার পূর্বশর্ত এখলাস। মুখলিস-নিষ্ঠাবান তিনি, যিনি তার সকল কাজে আল্লাহর সন্তুষ্টি খোঁজেন। ইরশাদ হচ্ছে- বল, ‘আমার সালাত, আমার কুরবানি, আমার জীবন ও আমার মরণ জগতসমূহের প্রতিপালক আল্লহরই উদ্দেশ্যে’। এখলাসের সাথে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র আমলও মুমিনের অমূল্য সম্পদ ও আখেরাতের সম্বল। দুনিয়াভর্তি স্বর্ণ দিয়েও তার মূল্যমান নির্ধারণ অসম্ভব। হযরত মূসা আ. একটানা আটদিন সফর করে মিশর থেকে মাদয়ানে হযরত শুয়াইব আ. এর খেদমতে হাযির হন। হযরত মূসা আ. ছিলেন ক্ষুধায়, তৃষ্ণায় ক্লান্ত। আর শুয়াইব আ. সান্ধ্যকালীন খাবার গ্রহণে লিপ্ত। শুয়াইব আ. মূসাকে বললেন, এসো, খাবার খাও। মূসা আ. বললেন, আমি আল্লাহ পাকের আশ্রয় গ্রহণ করছি। শুয়াইব আ. বললেন, তুমি কি ক্ষুধার্ত নও? বললেন, হ্যাঁ, তবে আমার ভয় হচ্ছে, যে জন্তুগুলোকে আমি পানি পান করিয়েছি, তার জন্য যেন আমি কোনো পারিশ্রমিক গ্রহণ না করি। কেননা, আমি এমন বংশের লোক যারা আখেরাতের জন্য কৃত আমলকে পৃথিবী ভর্তি স্বর্ণের বিনিময়েও বিক্রি করতে রাজি নয়। (নূরুল কোরআন)

ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি বিদ্যাপীঠ ‘জামিয়া মাদানিয়া আঙ্গুরা মুহাম্মদপুর’- এর রূপকার শায়খ মাওলানা আবদুল হাই রাহ. এক জীবনালেখ্য, এক ইতিহাস, এক পবিত্র জীবন চরিত্র। কী ব্যক্তিক, কী পারিবারিক, কী সামাজিক, কী দারস-তাদরীস, কী বন্দেগী, কী রোদন, কী মাদরাসা পরিচালনা—সর্বক্ষেত্রে তিনি ছিলেন এখলাস ও লিল্লাহিয়্যতের এক প্রতিচ্ছবি। যে লোকটির কর্মমুখর জীবনের আগাগোড়া এখলাস-নিষ্ঠায় ভরপুর। তাঁর জীবনের কোন দিক নিয়ে আলোচনা করব—আমি নগণ্য ভেবে পাচ্ছি না। জামিয়ার মরহুম মুহতামিম সাহেবকে মোটামুটি কাছে থেকে যারা দেখেছেন তাদের সবার কাছে রয়েছে তাঁর এখলাসপূর্ণ মহৎজীবনের অনেক ঘটনা।

একজন লোকের এখলাস ও লিল্লাহিয়্যাতের এতগুলো! দৃষ্টান্ত থাকা সত্ত্বেও তাঁর জীবদ্দশায় সেগুলো প্রকাশ না পাওয়া, আলোচনায় না আসা আমি অধমের মতে এটি তাঁর কারামত। তিনি স্বভাবত সর্বদা নিজেকে গোপন রেখেছেন। তাও আবার সবার অজান্তে। যখন সময় যশ, খ্যাতি, অর্জনের- সুযোগ আত্মপ্রতিষ্ঠার, নিজেকে বড় করে তুলে ধরার তখনই নিজেকে গুটিয়ে নিতেন। অন্যকে আগে বাড়িয়ে নিজে পড়ে যেতেন পেছনে। “তাদেরকে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহ্ পাকের ইবাদত করার জন্যেই আদেশ দেওয়া হয়েছে” (সূরা বায়্যিনাহ) “তুমি দ্বীনে খাঁটি হও। অল্প আমলই তোমার নাজাতের জন্য যথেষ্ট হবে।” (আল হাদিস) তিনি ছিলেন এসবের বাস্তব নমুনা। প্রতিকৃতি। জীবনে যা করেছেন সব মাওলার সন্তুষ্টির জন্য করেছেন। পাশাপাশি আল্লাহর কাযা ও ফায়সালার ওপর ছিল তাঁর আস্থা অবিচল, হিম্মত অটুট। যার কারণে কোনোদিন তার মাঝে না পাওয়ার দুঃখ, হারানোর ব্যথা পরিলক্ষিত হয়নি। দুঃখ ভারাক্রান্ত হয়ে স্বীয় কর্তব্য থেকে ক্ষণিকের তরেও সরে পড়েন নি। বরং আরো নিষ্ঠা ও তাওয়াক্কুল নিয়ে কর্মক্ষেত্রে অধিক তৎপর হয়ে ওঠেন।

মরহুম মুহতামিম সাহেব হুজুর আপন ভাইদের মধ্যে সবার অগ্রজ। পরিবারটি ছিল বড়। একান্নবতি। তাঁর পারিবারিক জীবন পর্যালোচনা করলে দেখা যায় তিনি ভাইদের বড় হিসেবে দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে ছিলেন সদা তৎপর। কিন্তু স্বার্থসিদ্ধি ও অধিকার আদায়ে ছিলেন সম্পূর্ণ নির্লিপ্ত। পরিবারে বড় হলেও প্রাপ্তির ক্ষেত্রে তিনি ভাইদের আগে বাড়িয়ে তিনি থাকতেন সবার পেছনে। ভিটে মাটি নির্বাচন ও ভাগ বাটোয়ারার বেলায়ও তাঁর একই নীতি ছিল।

একদিনের ঘটনা

কোন এক অনিবার্য কারণে তিনি তাঁর সকল ভাইদের একত্র করে বলেন, ‘আমি যদি কারও হক তলফি কিংবা পক্ষপাতিত্ব করে থাকি তবে কিয়ামতে যেন আমার শাফআত নসিব না হয়।’ এ কী সাধারণ কথা! পূর্ণ বসীরতের সাথে নিষ্ঠা ও ন্যায়নীতির ওপর অধিষ্ঠিত না হলে এমন কঠিন কথা বলা সম্ভব? মরহুম মুহতামিম সাহেবের বড় ছেলে হোসাইন আহমদসহ বিভিন্নজনের সাথে তাঁর জীবনের এখলাস ও লিল্লাহিয়্যাত নিয়ে আলাপ করলে তারা যে দাস্তান তুলে ধরেন তাতে আমি চমকে যাই। তারা অনেক ঘটনা বলেন। তন্মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা নিুরূপ:

এক. তাঁর বড় ছেলে মৌলবি হোসাইন আহমদ এক সময় বিদেশে ছিলেন। পিতার নির্দেশে প্রবাসকালীন তাঁর উপার্জিত টাকা পাঠাতেন তাঁর এক চাচার নিকট। দেশে আসার সময় যে লাগেজটা আনতেন ভাইদের অনুপস্থিতিতে তা খুলতে দিতেন না। এটি তাঁর নিঃস্বার্থপরতার প্রমাণ।

দুই. তাঁর এক ভাতিজা মাওলানা আজিজ আহমদ। এক সময় তিনি জামিয়ায় ভর্তি হন। মরহুম মুহতামিম সাহেব হুজুর রাহ. জামিয়ার মুহতামিম। অন্যান্য ছাত্রদের ন্যায় তিনিও থাকতেন জামিয়া হোস্টেলে। হোস্টেলের খাবার তার স্বাস্থ্যের অনুকুল না হওয়ায় একটি লজিং এর অতীব প্রয়োজন। চাচা জামিয়ার মুহতামিম হওয়ার পরও তার একটি লজিংয়ের ব্যবস্থা না হওয়াতে স্বভাবত তার মনে দুঃখ আসার কথা। কিন্তু এক্ষেত্রে মরহুম মুহতামিম সাহেবের নীতি ছিল- ‘সব ছাত্র সমান’। ভাতিজা হিসেবে অগ্রাধিকার পাওয়ার সুযোগ এখানে সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। এ ব্যাাপারে তার বক্তব্য স্পষ্ট—অন্যরা হোস্টেলে থাকতে পারে তুমি পারবে না কেন? কষ্ট স্বীকার না করলে দ্বীন শিক্ষা করা যায় না। অবশেষে তার পিতা মাওলানা আবদুল আলীম সাহেব আঙ্গুরা মুহাম্মদপুরের মিসবাহ উদ্দিন সাহেবকে বলে তার ঘরে লজিং এর ব্যবস্থা করে দেন।

তিন. মরহুম মুহতামিম সাহেব মাথিউরা দারুল কুরআন মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা ও মুহতামিম। মাদরাসা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন মুখলিস-নিঃস্বার্থ। এখলাস ও লিল্লাহিয়্যাতের ওপর তিনি মাদরাসার ভিত্তি স্থাপন করেন। তাঁর ছোট ছেলে মাওলানা মাহমুদ হোসাইন দাওরা পাশ করার পর মাথিউরা  মাদরাসার পক্ষ থেকে তাকে উক্ত মাদরাসার শিক্ষক পদে নিয়োগের আবদার পেশ করা হয়। তিনি তা বলে প্রত্যাখ্যান করেন যে, আমি মাদরাসা করি নাই আমার ছেলে ভাতিজারা এখানে চাকরি করবে। অবশেষে মাদরাসার বিভিন্ন স্বার্থ দেখিয়ে মাদরাসা কমিটির বারংবার সনির্বন্ধ অনুরোধে এক পর্যায়ে তিনি সম্মত হন। মাওলানা মাহমুদ হোসাইন এখনও উক্ত মাদরাসার শিক্ষক।

মরহুম মুহতামিম সাহেব জামিয়ার কাজে চাঁদা কালেকশনের নিমিত্ত তিনবার যুক্তরাজ্য গমন করেন। হযরত চাইলে এ সুযোগে তাঁর ছেলেকে সেদেশে যাওয়ার কোনো ব্যবস্থা করে দিতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি; করতেও যাননি। তাঁর যুক্তরাজ্য সফরের একমাত্র উপলক্ষ ছিল জামিয়া তথা দ্বীনের নিঃস্বার্থ খেদমত। উপলক্ষ যেটাই হোক পর পর তিনবার যুক্তরাজ্য সফর করেও একটি গাড়ি, বাড়ি অন্তত নিজের বসবাসের জন্য একটি ঘরও নির্মাণ করতে পারেননি। অর্থনৈতিকভাবে পূর্ণ স্বাবলম্বী হতে পারেননি। জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়নি। পূর্বাপর অবস্থা সমান। কী তার কারণ? তার কঠিন ও উচ্চাঙ্গের এখলাস ও লিল্লাহিয়্যাত। জামিয়ার প্রয়োজনকে সব সময় বড় করে তুলে ধরতেন। নিজের প্রয়োজন নিয়ে ভাবতেন না। অবশ্য হাদিয়া গ্রহণ করতেন তবে হাদিয়া পাওয়ার ভান করতেন না।

মাওলানা শিহাব উদ্দিন রাহ. জামিয়া মাদানিয়ার প্রতিষ্ঠাতা মুহতামিম হলেও বর্তমান জামিয়র রূপকার মাওলানা আবদুল হাই রাহ.। এতে কোনো দ্বিমত নেই। তার নিষ্ঠা, ত্যাগ ও নিরলস সাধণার বাস্তব রূপায়ণ আজকের জামিয়া। জামিয়া প্রতিষ্ঠার পেছনে ব্যক্তিগত খ্যাতি ও সুনাম অর্জনে তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ নির্লিপ্ত। অকুণ্ঠচিত্তে বিলিয়ে দিয়েছেন সারাটি জীবন। নীরবে নিরবধি করে গেছেন দায়িত্ব পালন। জামিয়া মাদানিয়ার ফাযিল এক সময়ের জামিয়ার দীর্ঘদিনের সুযোগ্য শিক্ষক মাওলানা বিলাল আহমদ ইমরান দু’টি ঘটনা বলেন:

এক. এককালে জামিয়ার ওয়াজ মাহফিলের স্থায়ী পোস্টার ছিল। পোষ্টারের নিচে লেখা ছিল দাওয়াতক্রমে “খাদিমানে মাদরাসা”। মাওলানা বিলাল আহমদ ইমরান ও জামিয়ার আরেক ফাযিল, এক সময়ের জামিয়ার উস্তাদ এবং মুহাতামিম সাহেবের বিভিন্ন সময়ের সফর সঙ্গী মাওলানা আবদুল গফফার ছয়ঘরি তারা তাকে প্রস্তাব করলেন- ‘খাদিমানে মাদরাসা’র স্থলে হুজুরের নাম আসলে ভালো। তিনি এতে সায় দেননি। তারা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বারবার বিষয়টি তাঁর নিকট তুরে ধরছেন আর তিনি তাঁর চিরাচরিত বিনয় ও নম্রতার সাথে অসম্মতি প্রকাশ করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, আমি তো আর একা মাদরাসার খেদমত করছি না। সকল আসাতিযা মাদরাসার খাদিম। নাম আসলে সবার নাম আসুক। শুধু আমার নাম আসবে কেন? তারা আদবের সাথে একটু পীড়াপীড়ি করলে তিনি জোর দিয়ে স্পষ্টভাবে বলেন দেন—মাওলানা! আপনারা তা করতে যাবেন না। আমার সম্মতি নেই। যদি এটি করেন তবে সে পোস্টার আমি বিলি করতে দেব না। কঠিন ভাষায় তিনি তার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিলেন। অবশ্য তারাও আর কোনো কথা বলেন নি।

দুই. মাওলানা বিলাল আহমদ ইমরান বলেন, নতুন মাদরাসার মসজিদে নামাযান্তে মুহতামিম সাহেব ভুলে নিজের জুতো মনে করে আমার জুতো পায়ে পরে তার রুম পর্যন্ত যান। যখন টের পান জুতোটি তার নয় তখন তিনি জুতোটি হাতে করে নগ্নপদে নিয়ে আসেন। যথাস্থানে রেখে নিজেরটি পায়ে দিয়ে চলে যান। চিন্তার বিষয়! জুতোটি তার নয় টের পাওয়া মাত্র পা থেকে খুলে হাতে করে নিয়ে এলেন কেন? কারণ একটাই—অজান্তে অন্যের জুতো পরেছেন। জ্ঞাত হওয়ার পর তো আর পরা যায় না। তিনি উচ্চ মর্তবার একজন মুখলিস বান্দা ছিলেন বলেই তার এতো সতর্কতা।

জামিয়া মাদানিয়ার বর্তমান মুহতামিম দীর্ঘ কয়েক যুগের সফল নাযিমে তালিমাত মাওলানা জিয়া উদ্দিন সাহেব তাঁর ছাত্র। তাঁর কোনো আচরণ থেকে বুঝা যেত না যে, তিনি তাঁর উস্তাদ, জামিয়া পরিচালনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে তিনি সব সময় তার কর্মপন্থা ও মতামতকে অগ্রাধিকার দিতেন। তিনি জামিয়ার মুহতামিম হলেও এককভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নিতেন না। আভ্যন্তরীন বিষয়ে সর্বদা মজলিসে ইলমির সবার মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতেন। নাযিম সাহেবকে তিনি খুবই ভালবাসতেন। শেষ রাতে যখন মাদরাসা, মাদরাসার আসাতিযার জন্য দুয়া করতেন তখন নাযিম সাহেবের জন্য দুয়া করতেন বিশেষভাবে। তাঁর এখলাস ওলিল্লাহিয়্যাতের কারণে তিনি সর্বক্ষেত্রে এমনকি বেতন ভাতার ক্ষেত্রে নাজিম সাহেবেকে অগ্রাধিকার দেওয়ার পক্ষে ছিলেন।

শেষ কয়েকটি বছর তিনি বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েন। অসুস্থতার কারণে বাড়িতে থাকতে হয়। সর্বদা মাদরাসায় আসতে পারতেন না। এক সময় তিনি নিজ বাড়িতে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন। শয্যাশায়ী হলেও তিনি আমরণ মাদরাসার মুহতামিম ছিলেন। বেতন-ভাতাও জারি ছিল। যদিও বেতন-ভাতা গ্রহণে তাঁর মনে কিছুটা সঙ্কোচবোধ ছিল। নিয়ম মাফিক মাদরাসার মজলিসে শুরা কর্তৃক মোট বেতন ভাতায় বৃদ্ধি ঘটত। তার অবস্থান বাড়িতে হলেও অন্যান্য আসাতিযায়ে কেরামের ন্যায় তারও বেতন ভাত বৃদ্ধি পেত। তিনি এর পক্ষে ছিলেন না। সুতরাং তিনি তা গ্রহণ করে মাদরাসার ফাণ্ডে জমা দিয়ে দিতেন। এখলাস ও নিঃস্বার্থপরতার এমন দৃষ্টান্ত সত্যিই বিরল। পরিশেষে আমরা তার মাগফিরাত কামনা করি। তার রুহানি ও জিসমানি সন্তানদের, আত্মীয় সম্পর্কিত সকলের ইহকালীন শান্তি নিরাপত্তা ও পরকালীন চিরস্থায়ী সফলতা কামনা করছি। আমরা ও যেন তার মতো গড়ে উঠি, তাঁর রুহানি ফয়যে ধন্য হই- দরবারে এলাহিতে বিনীতভাবে এ আরযি পেশ করে শেষ করলাম।

 

লেখক

জামিয়ার সাবেক শিক্ষার্থী

মুহাদ্দিস, জামিয়া মাদানিয়া আঙ্গুরা মুহাম্মদপুর